Beta
মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

শান্তর ‘হাতের খেলা মুখে আসি গেছে’!

শান্ত
Picture of সনৎ বাবলা

সনৎ বাবলা

[publishpress_authors_box]

সোমবার ম্যাচ শেষে নাজমুল হোসেন শান্ত কথা বলছিলেন পোস্ট ম্যাচ প্রেজেন্টেশনে। বাংলাদেশ অধিনায়ক হিসেবে নিয়ম রক্ষার কথা। এরপরও কেন যেন মনে হচ্ছে, “তার হাতের খেলা মুখে আসি গেছে।”

উক্তিটা আসলে মাশরাফি বিন মর্তুজার। দুই দশক আগের গল্প। তখন ঠিক আজকের মাশরাফি হয়ে উঠেননি তিনি, কৌশিক নামেই তার শুরুটা হয়েছিল। অন্যদিকে তার বন্ধু মোহাম্মদ আশরাফুলের ‘অ্যাশ’-এর খ্যাতিও হয়নি তখন। অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টে দুই বন্ধু রুমমেট। তখন হালের ক্রিকেটের মতো নানা কেতা, বিধিনিষেধও ছিল না। ক্রিকেটারদের রুমও অবারিত ছিল সাংবাদিকদের জন্য। তাদের রুমে গিয়ে আড্ডাচ্ছলে সাংবাদিকদের নানা জিজ্ঞাসা।

দলের অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করতেই আশরাফুল ফোঁড়ন কেটে পাশে বসা মাশরাফিকে দেখিয়ে বলেন, “আমাদের সেরা ফাস্টবোলারকে জিজ্ঞাসা করেন। আমার চেয়েও ভাল জবাব আছে তার কাছে।”

বন্ধুর দুষ্টুমি বুঝতে পেরে মাশরাফিও পাল্টা বাউন্সার দিয়ে বসেন, “তোর সমস্যা আসলে তুই। তোর হাতের খেলা মুখে আসি গেছে।”

শুনেই সবার হো হো করে হাসি। বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্তকে কথা বলতে দেখে মাশরাফির সেই উক্তি মনে পড়ে গেল। সঙ্গে ওই হাসিও। অথচ শান্ত খারাপ কিছু বলেননি, ম্যাচ জয়ের খুশির কথাই বলেছেন, “এই রাউন্ডে আমরা যেভাবে খেলেছি তাতে খুব খুশি। আশা করি, পরের রাউন্ডে এমন বোলিং পারফরম্যান্স থাকবে আমাদের তবে ব্যাটিংটা নয়। ব্যাটিং আরো ভাল হবে আশা করি।” এটা এমন কোনও হাসির কথা নয়। আর আশা ছাড়া অধিনায়ক কি-ই বা করতে পারেন আর বলতে পারেন। এরপরও কেন যে হাসি পেয়ে গেল! 

আসলে ব্যাটিং নিয়ে তার এই আশাবাদের রেকর্ড বাজছে সেই যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ থেকে। বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব শেষেও কিছু মেলেনি। তার সেই আশায় গুড়েবালি। তাছাড়া অন্যদের কাছে আশা করার আগে আয়নায় নিজের মুখটাও যে একবার দেখা জরুরি। নিজের ব্যাটও বারবার বিশ্বাস ভঙ্গ করে করুণ চেহারা নিয়েছে। চার ম্যাচে অধিনায়কের সংগ্রহ ৭, ১৩, ১ ও ৪; সাকুল্যে ২৫ রান। এজন্যই বোধহয় হাসি পায়। কেউ কেউ প্রচণ্ড নিন্দা-মন্দও করছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল তুলাধুনা চলছে শান্ত-লিটনের। দুজনকে দলে রাখা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠে গেছে। সেসব খুব যৌক্তিক। এক্ষেত্রে লিটন খানিকটা অনিরাপদ জায়গায় থাকলেও শান্ত যে অধিনায়ক। একটা টুর্নামেন্টের মাঝপথে অধিনায়ককে বাদ দেয় কী করে! সেটা খুব খারাপও দেখায়। তাই ‘ক্যাপ্টেন কোটা’য় শান্তকে আপাতত সইতে হবে বৈকি। নিজের ব্যাটে রান খরা চললেও বোলারদের ঢাল করে এগিয়ে যাচ্ছেন অধিনায়ক, “এই ফরম্যাটে বোলিং ইউনিট খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করবো, তারা (বোলাররা) ফর্ম ধরে রাখবে। আমাদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে সুপার এইটে এবং সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে।”  

শুনে আবারও হাসি পেল।

তবে কথা বলাটাও অধিনায়কের কাজের মধ্যেই পড়ে। এখন আসলে এটাই তার একমাত্র কাজ। শান্ত কদিন অগে নিজের কাজের পরিধি স্পষ্ট করে দিয়েছেন এভাবে, “অধিনায়ক হয়েছি বলে এমন না যে, প্রতিদিনই ভাল খেলতে হবে। এরকম মনেও হচ্ছে না আমার।”

এবার কিন্তু সত্যিই মনে হচ্ছে, শান্তর ‘হাতের খেলা মুখে আসি গেছে’।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত