Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪
Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব প্রকাশে হাইকোর্টে আবেদন

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

পুলিশ ও ‍রাজস্ব বোর্ডের একের পর এক কর্মকর্তার বিত্ত-বৈভবের খবর ফাঁস হওয়ার প্রেক্ষাপটে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন হয়েছে।

সুবীর নন্দী দাস নামে এক আইনজীবী সোমবার হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করেন। এতে সরকারি চাকরি বিধির ১৩ (১)(২) অনুসারে সব সরকারি কর্মচারীর স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পদের হিসাব দাখিল এবং তা প্রকাশের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে এই বিধি অনুসারে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দাখিল ও প্রকাশ এবং দুর্নীতির প্রতিরোধে যথাযথ আইন প্রণয়ন করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।  

এই আবেদনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, অর্থ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, এনবিআর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিট আবেদনকারী সুবীর দাসের আশা, বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে তার আবেদনের শুনানি শিগগিরই হবে।

সরকারি চাকুরেদের সম্পদের হিসাব পাঁচ বছর পরপর জমা দেওয়ার বিধান দেশে রয়েছে ১৯৭৯ সাল থেকে। তবে এর কার্যকারিতা সেভাবে দেখা যায়নি কখনও।

২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার মধ্যে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সরকারি চাকুরেদের তাদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আমলেও হিসাব জমা দিতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও খুব একটা সাড়া মেলেনি।

সরকারি কর্মচারীদের আয়কর বিবরণীতে তাদের সম্পদের  তথ্য থাকার বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়। তবে এমন অভিযোগও আছে, সরকারি কর্মচারীদের কেউ কেউ এনবিআরে জমা দেওয়া বিবরণীতে প্রকৃত সম্পদের তথ্য দেখান না, বেনামে সম্পদ লুকিয়ে রাখেন।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধে সরকারি কর্মচারীদের কাছ থেকে বছর বছর সম্পদের হিসাব নেওয়ার তাগিদ দেয়।

এরমধ্যেই সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমান, কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালসহ কয়েকজনের আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বিপুল সম্পদের খবর আসে সংবাদমাধ্যমে। এসব নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনও অনুসন্ধানে নেমেছে।

এরমধ্যেই রিট আবেদন করলেন আইনজীবী সুবীর দাস। এই পদক্ষেপ নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আপনারা জানেন সম্প্রতি সরকারি কর্মচারীদের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। একজন সরকারি কর্মচারী এত অল্প সময়ে কীভাবে এত সম্পত্তি অর্জন করেন, আমরা সেটি জানতে চেয়েছি।”

চাকরি বিধি অনুসারে সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনও সরকারি কর্মচারী একটি ভবনও নির্মাণ করতে পারেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারপরও কীভাবে তারা এত সম্পত্তি অর্জন করলেন?

“এছাড়া একজন সরকারি কর্মচারী চাকরিতে প্রবেশের সময়ই তার সম্পত্তির হিসাব দাখিল করবেন এবং প্রতি পাঁচ বছর পর পর সেই সম্পত্তি বেড়েছে কি কমেছে, তারও একটি বিবরণী দাখিল করার বিধান রয়েছে। কিন্তু ২০০৮ সালের পরে মন্ত্রণালয় থেকে বার বার তাগাদা দিলে সরকারি কর্মচারীরা সেই সম্পত্তি বিবরণ দাখিল করেননি।”

সেই কারণে আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি ঠেকাতেই আদালতের শরণ নিয়েছেন বলে জানান সুবীর দাস।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত