Beta
বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
একনায়কদের শেষ সময়ের লক্ষণ

বিরোধীদের পর এবার সহযোগীদের উপরও খড়গহস্ত শি

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। ছবি: রয়টার্স।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। ছবি: রয়টার্স।
[publishpress_authors_box]

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার ক্ষমতার প্রথমদিকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার সময়ই সামরিক বাহিনীর ওপর তার নিয়ন্ত্রণ দৃঢ় করেছিলেন। এজন্য তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর ক্ষমতাবান জেনারেলদের সেনাবাাহিনী থেকে সরিয়ে দেন এবং নিজের অনুগত মিত্র ও শিষ্যদের নিয়োগ দেন।

দুই মেয়াদে দশ বছর দায়িত্ব পালন শেষে গত বছর তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পরও শি জিন পিং সেনাবাহিনীর কাঠামোগত সংস্কার সম্পন্ন করেছেন। এবারও তিনি সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় পদগুলোতে নিজের অনুগত লোকদের বসিয়েছেন।

কিন্তু সম্প্রতি আবারও তিনি দেশটির পিপলস লিবারেশন আর্মিতে (পিএলএ) শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। যেন দুর্নীতি ও অসহযোগিতার বিরুদ্ধে এক নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন শি।

তবে ইতিহাসের অনেক শক্তিশালী নেতার মতো তিনিও এবার ক্রমান্বয়ে নিজের নির্বাচিত অনুগতদের ওপর খড়গহস্ত হচ্ছেন।

এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, গত মাসের শেষের দিকে শি নিজের ঘনিষ্ঠ এক শিষ্যকে সেনাবাহিনী থেকে অপসারণ করেন। এই সহযোগী দীর্ঘদিন ধরে তার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সেনাবাহিনীতে রাজনৈতিক আনুগত্য নিশ্চিত করাসহ উচ্চপদে নিয়োগ যাচাইয়ের দায়িত্বে ছিলেন।

তিনি হলেন চীনের কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশন (সিএমসি)-এর সদস্য এবং শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বাধীন এই সর্বোচ্চ সামরিক কমান্ডের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব অ্যাডমিরাল মিয়াও হুয়া।

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, তাকে ‘গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গের’ অভিযোগে তদন্তের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। ‘গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গ’ শব্দ দুটি দুর্নীতি ও অসহযোগিতার জন্য প্রচলিত শব্দবন্ধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

মিয়াও হুয়া সিএমসি’র রাজনৈতিক কার্যক্রম বিভাগের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, যিনি সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক আনুগত্য ও কর্মী নিয়োগ তত্ত্বাবধান করতেন। সাম্প্রতিক শুদ্ধি অভিযানে বরখাস্ত হওয়া সবচেয়ে উচ্চপদস্থ ব্যক্তি তিনি।

গত গ্রীষ্ম থেকে চীনের প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক ডজনেরও বেশি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বরখাস্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে শি’র হাতে সিএমসি-তে পদোন্নতিপ্রাপ্ত শেষ দুই প্রতিরক্ষামন্ত্রীও রয়েছেন।

তবে, তাদের কারও সঙ্গেই শি’র সেরকম দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক ছিল না, যা মিয়াও’র ক্ষেত্রে দেখা গেছে। মিয়াও’র সঙ্গে শি’র এই সম্পর্ক তার রাজনৈতিক জীবনের শুরুর দিনগুলোতে, চীনের ফুজিয়ান প্রদেশে তার কর্মজীবনের সময় থেকে গড়ে উঠেছিল।

মিয়াও’র বিরুদ্ধে তদন্ত শি’র সামরিক বিশুদ্ধি অভিযানের একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচন করেছে। এতে সামরিক বাহিনীতে দীর্ঘদিনের দুর্নীতি দূর এবং ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার সময় এর যুদ্ধ-প্রস্তুতি উন্নত করার জন্য শি’র সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

অ্যাডমিরাল মিয়াও হুয়া

গত এক দশকে শি জিনপিং পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) এক উচ্চাভিলাষী রূপান্তর প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধান করেছেন। এই রূপান্তরের লক্ষ্য ছিল পিএলএ-কে একটি ‘বিশ্বমানের’ যুদ্ধক্ষম বাহিনীতে পরিণত করা, যা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে।

এই আধুনিকায়ন প্রচেষ্টার অন্যতম মূল উদ্দেশ্য হলো চীনকে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং জয়ের জন্য প্রস্তুত করা। তাইওয়ান একটি স্বশাসিত গণতান্ত্রিক দ্বীপ, যাকে বেইজিং নিজেদের অংশ বলে দাবি করে।

পেন্টাগনের অর্থায়নে পরিচালিত ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী জোয়েল ওউথনো বলেছেন, তবে মিয়াও হুয়ার পতন আবারও সেই প্রশ্ন তুলেছে যা গত গ্রীষ্মের বিশুদ্ধি অভিযানের সময়ও উঠেছিল। প্রশ্নটি হলো- শি তার শীর্ষ জেনারেলদের প্রতি আসলে কতটা আস্থা রাখেন, বিশেষত তাদের প্রতি, যাদের যুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব থাকবে?

“যদি তিনি আশঙ্কা করেন যে তার নিজের লোকরাই তার প্রতি বা তার এজেন্ডার প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্যশীল নয়, তবে এটি একটি বিশাল সমস্যা হয়ে দেখে দেবে”, বলেন ওউথনো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিনের সহযোগীকে শি’র সরিয়ে দেওয়া স্বৈরশাসকদের একটি পরিচিত সংকটের প্রতিই ইঙ্গিত করছে। এরকম সংকট তার পূর্বসূরি মাও সেতুংয়ের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছিল। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সরিয়ে দেওয়ার পর, সর্বোচ্চ নেতা কখনোই তাদের ক্ষমতার প্রতি নতুন হুমকির সন্ধান বন্ধ করেন না। এমনকি তা তাদের ঘনিষ্ঠ জনদের দিক  থেকে আসলেও।

‘অশ্লীল মাত্রার দুর্নীতি’

মিয়াও হুয়ার সঙ্গে শি জিনপিংয়ের সম্পর্ক প্রায় তিন দশকের পুরনো। ফুজিয়ানের অধিবাসী মিয়াও ১৯৮০-এর দশক থেকে ২০০০ সালের প্রথমভাগ পর্যন্ত সাবেক ৩১তম গ্রুপ আর্মিতে একজন রাজনৈতিক কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। একই সময়ে শি ফুজিয়ান প্রদেশে স্থানীয় কর্মকর্তা থেকে ক্রমে প্রাদেশিক গভর্নরের পদে উন্নীত হচ্ছিলেন।

সিঙ্গাপুরের এস. রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের গবেষণা সহযোগী এবং দীর্ঘদিন ধরে পিএলএ পর্যবেক্ষক জেমস চার বলেছেন, “বিশ্বাসযোগ্য সূত্র অনুযায়ী, শি তখন নিয়মিত ৩১তম গ্রুপ আর্মি পরিদর্শন করতেন”, এবং মিয়াও’র সঙ্গে তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিল বলে জানা যায়।

শি ক্ষমতায় আসার পরই মিয়াও’র সামরিক ক্যারিয়ার দ্রুত এগিয়ে যায়। ২০১৪ সালে তিনি পিএলএ’র নৌবাহিনীর রাজনৈতিক কমিশনার পদে পদোন্নতি পান। এটি ছিল স্থলবাহিনীতে দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ার থেকে একটি ব্যতিক্রমী পরিবর্তন। তিন বছর পর, ২০১৭ সালে, তিনি আরও বড় পদোন্নতি পেয়ে কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনে (সিএমসি) যোগ দেন, যা সামরিক শক্তির সর্বোচ্চ কেন্দ্র।

জেমস চার বলেন, “আমরা শি জিনপিংয়ের প্রতি মিয়াও হুয়া’র মতো এতো বেশি বিশ্বস্ত অনুসারী আর কাউকে খুঁজে পাব না। শেষ পর্যন্ত সেই মিয়াও হুয়াও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন। এ থেকে এটি স্পষ্ট যে, শি নিজেও পিএলএর উচ্চপদস্থদের মধ্যে বিরাজমান দুর্নীতির অশ্লীল মাত্রা অনুমান করতে পারেননি।”

গত ১৮ মাস ধরে শি’র শুদ্ধি অভিযান মূলত অস্ত্র সংগ্রহ এবং চীনের পারমাণবিক ও প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র তত্ত্বাবধানকারী রকেট ফোর্সের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের টার্গেট করে চালানো হয়েছিল। তবে মিয়াও হুয়ার পতন এই দমন অভিযানের পরিসরকে নতুন খাতে প্রসারিত করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক কার্যক্রম— যাকে শি সামরিক বাহিনীর “জীবনরেখা” বলে উল্লেখ করেছেন— এবং নৌবাহিনী।

জেমস চার বলেন, “আমি নিশ্চিত তারা যেখানেই অনুসন্ধান করবে, সেখানেই সমস্যার সন্ধান পাবে। এখন দেখার পাল কোন কোন খাতকে তারা বেছে নেয়।”


‘আস্থার সংকট’

মিয়াও হুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো বিবরণ দেয়নি। পিএলএর প্রধান রাজনৈতিক কমিশনার হিসেবে মিয়াও’র দায়িত্ব ছিল সামরিক বাহিনীর প্রতি শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টির আনুগত্য নিশ্চিত করা।

তিনি সামরিক বাহিনীতে পদোন্নতি তত্ত্বাবধান করতেন এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের রাজনৈতিক আনুগত্য যাচাই করতেন। নৌবাহিনীতেও তিনি একই ধরনের ভূমিকা পালন করেছেন।

অতীতে এ ধরনের পদ দুর্নীতির জন্য উর্বর ক্ষেত্র হিসাবে পরিচিত ছিল, বিশেষত পদোন্নতির জন্য ঘুষ দেওয়ার ক্ষেত্রে। মিয়াও’র পূর্বসূরি, জেনারেল ঝাং ইয়াং, ঘুষের অভিযোগে তদন্তের মুখে আত্মহত্যা করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা যখন তীব্র হচ্ছে, তখন পিএলএ’র নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ও অন্যান্য অস্ত্র সংগ্রহ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এটি দুর্নীতির জন্য অনেক সুযোগ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন, ইউনিভার্সিটি অব সান ডিয়েগোর রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ভিক্টর শিহ।

তবে মিয়াও হুয়ার পতনের পেছনে আরেকটি সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন ভিক্টর শিহ। তিনি বলেন, “সামরিক বাহিনীতে একটি নিজস্ব গোষ্ঠী তৈরির প্রচেষ্টা অত্যন্ত স্পষ্ট করে তোলার জন্য মিয়াও হুয়া অভিযুক্ত হতে পারেন।”

শি জিনপিং বারবার পার্টি এবং সামরিক বাহিনীতে আলাদা গোষ্ঠী তৈরির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন। শিহ যোগ করেন, “অবশ্য, এমন কিছু করার অনুমতি একমাত্র শি নিজেই রাখতে পারেন।”

কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, মিয়াও নৌবাহিনীতে তার বেশ কয়েকজন সহযোগীকে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করেছিলেন। এর মধ্যে রয়েছেন রকেট ফোর্স কমান্ডার ওয়াং হৌবিন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জুন।

মিয়াও হুয়ার বিরুদ্ধে তদন্তের ঘোষণা আসে ঠিক একদিন পর, যখন ফিনান্সিয়াল টাইমস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান এবং সাবেক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলা হয় যে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জুন দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের মুখে পড়েছেন।

তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই প্রতিবেদনের দাবিকে “সম্পূর্ণ মিথ্যা” বলে খারিজ করে দেয়। এর কয়েক দিন পর ডং একটি নিরাপত্তা ফোরামে প্রকাশ্যে উপস্থিত হন।

ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ জোয়েল ওউথনো বলেছেন, মিয়াও হুয়ার পতনের নেপথ্য কারণ ‘আস্থার অভাব’। তবে এর সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো অস্পষ্ট।

একটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি হিসাবে ওউথনো ব্যাখ্যা করেন, শি হয়তো মনে করেছেন যে, মিয়াও অতিমাত্রায় ক্ষমতাবান ও স্বতন্ত্র হয়ে উঠেছেন। শি হয়তো এমন একটি প্রভাবশালী শক্তিকে উপড়ে ফেলতে চেয়েছেন, যা তিনি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না।

তিনি বলেন, “আমি মনে করি না, যারা নিজেদের ক্ষমতা এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতায় আত্মবিশ্বাসী, তারা এভাবে কাজ করেন। এটি আমার কাছে শি’র দুর্বলতার লক্ষণ বলে মনে হয়। যে কারণে তিনি বারবার পরিস্থিতি উল্টে দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেন।”


‘এটি ইতিহাসে বারবার ঘটে’

সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শ্যাংফু কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশন (সিএমসি) থেকে অপসারিত হওয়ার পর এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে মিয়াও হুয়ার পতন ঘটেছে।

এই শক্তিশালী সংস্থায় শি জিনপিংয়ের তৃতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার সময় ছয়জন সদস্য ছিলেন, যাদের সবাইকে শি’র অনুগত বলে মনে করা হতো। মিয়াওকেও সরিয়ে দেওয়া হলে সেখানে দুটি আসন শূন্য থাকবে।

চীনের অভিজাত শ্রেণির রাজনীতি বিশেষজ্ঞ ভিক্টর শিহ বলেন, অনেক স্বৈরশাসক, যেমন সাবেক সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্টালিন থেকে শুরু করে মাও সেতুং পর্যন্ত, শেষ পর্যন্ত তাদের নিজেদের লোকদের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছেন।

শিহ বলেন, “যখন তাদের প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বীরা সবাই চলে যায়, তখনও একজন স্বৈরশাসক কখনো ভাবতে পারেন না, ‘আচ্ছা, সব হুমকি চলে গেছে। এখন আমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারি।’ বরং তারা সবসময় মনে করেন যে নতুন হুমকি তৈরি হতে পারে, এমনকি তাদের ঘনিষ্ঠ মানুষদের কাছ থেকেও। এটি ইতিহাসে বারবার ঘটে।”

ফলস্বরূপ, স্বৈরশাসক সবসময় খুঁজতে থাকেন এমন কোনো সূক্ষ্ম লক্ষণ, যা প্রমাণ করে কেউ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। “Coalitions of the Weak”  নামের বইয়ের লেখক শিহ উল্লেখ করেন, মাও সেতুংয়ের জীবনের শেষ দিকের ক্ষমতার ধরন বিশ্লেষণ করেও একই প্রবণতা দেখা গেছে।

মাও সেতুংয়ের শেষ বছরগুলোতে, তিনি তার দীর্ঘকালীন শিষ্য সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং উত্তরাধিকারী লিন বিয়াওয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তাদেরকে তার বিরুদ্ধে এক অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।

শিহ বলেন, “এই ধরনের পরিস্থিতি শি জিনপিংয়ের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও তীব্র হবে, কারণ তার স্বাস্থ্য আগের মতো শক্তিশালী থাকবে না। সময়ের সঙ্গে তার মধ্যে নিজের ক্ষমতার প্রতি সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জের লক্ষণগুলোর প্রতি সংবেদনশীলতাও আরও তীব্র হবে।”

এখন পর্যন্ত শি জিনপিং স্পষ্টভাবে দুর্নীতি ও অসততার বিরুদ্ধে তার অভিযান চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প করেছেন।

এই মাসের শুরুর দিকে শি পিএলএর ইনফরমেশন সাপোর্ট ফোর্স পরিদর্শন করেন, যেখানে সিএমসিতে তার চার অবশিষ্ট অনুগত সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

নোট নেওয়া কর্মকর্তাদের সামনে শি বলেন, “আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যেন সেনারা পুরোপুরি আনুগত্যপূর্ণ, পবিত্র এবং নির্ভরযোগ্য থাকে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত